১৭ জুলাই, ২০১৯ ইং সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঢাকার সাথে বেনাপোল বন্দরকে যুক্ত করতে “বেনাপোল এক্সপ্রেস” উদ্বোধন করেন। পাশের দেশ ভারত থেকে আগত আন্তর্জাতিক পর্যটক ও যাত্রীদের কথা চিন্তা করে ইন্দোনেশিয়া থেকে আধুনিক ও উন্নতমানের রেলকোচ আমদানি করা হয় বেনাপোল এক্সপ্রেসের জন্যে। দ্রুতগতির এ ট্রেন ঢাকা থেকে বন্দরনগরী বেনাপোলের দূরত্ব কমিয়ে বাণিজ্য ও পর্যটনে অবদান রাখবে, এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। ট্রেনটি বেনাপোল-যশোরবাসীর জন্যে উপহার হিসেবে গণ্য করেছিলেন। কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সে আশা-আকাঙ্ক্ষার গুড়ে বালি দিয়ে রেল কর্তৃপক্ষ যে হঠকারিতা করেছে তা ক্ষমার অযোগ্য।

বেনাপোল এক্সপ্রেস চালুর পর বন্দরনগরীতে পাসপোর্টধারী ভারত থেকে আগত যাত্রীদের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছিল। ভারত থেকে বিদেশি পর্যটক ও দেশীয় যাত্রীরা সকালে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে উন্নতমানের বেনাপোল এক্সপ্রেসে দুপুরেই ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিতে পারতো। তুলনামূলক কম সময়ে (৬/৭ ঘন্টা) বেনাপোল-ঢাকায় চলাচল করত ট্রেনটি।

পরবর্তীতে করোনার মধ্যে ট্রেন চলাচল দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর ২০২১ সালে পুনঃরায় সারাদেশে ট্রেন চালু হলেও বেনাপোল এক্সপ্রেস চালু হয়নি। কারণ হিসেবে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে পাসপোর্ট যাত্রীদের চলাচল বন্ধ থাকায় যাত্রী সল্পতার অজুহাত দেওয়া হয়। অবশেষ সারাদেশে রেলসেবা চালু হওয়ার আরো কয়েকমাস পর ট্রেনটি চালু হলে উক্ত ট্রেনে চলাচলকারী সকল যাত্রী একটি পুরাতন ট্রেন দেখে বিস্ময়ে হতবাক হন! কোনরকম গণবিজ্ঞপ্তি ছাড়ায়, কোন কারণ উল্লেখ না করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আশাবাদকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে উন্নতমানের আধুনিক “বেনাপোল এক্সপ্রেস” ট্রেন বদলিয়ে ভারতের অব্যবহ্নত পুরাতন লক্করঝক্কর একটি ট্রেন আন্তর্জাতিক যাত্রী চলাচলকারী বন্দরনগরী বেনাপোল-ঢাকায় যুক্ত করা হয়। উক্ত ট্রেনটিতে যেমনি এসি সিটের কোন বগি নেই তেমনি অর্ধেক বাথরুম ব্যবহারের অযোগ্য বিধায় ঝালাই করে সিলগালা করা! ১০/১১ ঘন্টায় ঢাকা-বেনাপোল-ঢাকায় চলাচলে সময় লাগে উক্ত ট্রেনে! যা “বেনাপোল এক্সপ্রেস” নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আশা-আকাঙ্ক্ষার সাথে চরম সাংঘর্ষিক।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কী এমন ট্রেন উদ্বোধন করেছিলেন? যদি রেল কর্তৃপক্ষ যুক্তি দেন তারা ট্রেন বদলানোর কর্তৃত্ব রাখেন। সেক্ষেত্রে আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে, তাহলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে দিয়ে উন্নত ও আধুনিকমানের ট্রেন উদ্বোধন করিয়ে তাঁর আশাবাদ ব্যক্ত করানো কি সয়ং প্রধানমন্ত্রীর সাথে প্রতারণা না? উদ্বোধনের কিছুদিন পর উন্নত ও আধুনকি ট্রেনটি ‘চুরি’ করে রেল কর্তৃপক্ষ তাদের খেয়ালখুশি মত সেটি তুলনামূলক কম গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্যে যুক্ত করবেন এমন তথ্য কী মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আগে থেকে অবহিত করা হয়েছিল? বা এখন বিষয়টি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অবহিত আছেন?

বেনাপোল একটা আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট। লক্ষ লক্ষ দেশি বিদেশী পর্যটক এই বন্দর দিয়ে ভারত-বাংলাদেশ যাতায়াত করে থাকেন। বন্দরনগরী বেনাপোল-ঢাকায় উন্নত মানের ট্রেন সকলের অগোচরে ‘চুরি’ করে ভারতের অব্যবহ্নত ভঙ্গুর একটি ট্রেন যুক্ত করা রেলের জন্যে যেমনি মঙ্গলজনক নয়, তেমনি সরকারের জন্যে তা বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে ক্ষতিকর।

তাই আশা করি, যেহেতু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজে অনেক আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে উন্নত ও আধুনিক “বেনাপোল এক্সপ্রেস” উদ্বোধন করেছিলেন, সেহেতু তাঁর সাথে প্রতারণাকারী রেল কর্তৃপক্ষের এহেন ঘৃণিত-অবিবেচক কর্ম তাঁকে শুভাকাঙ্ক্ষীরা অবহিত করবেন। যাতে অনতিবিলম্বে জনগণের বৃহৎ স্বার্থে আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট বন্দরনগরী বেনাপোল-ঢাকায় পুনরায় আগের উন্নত ও আধুনিক ট্রেনটি চালু হয়।

মাননীয় রেলমন্ত্রীর কাছে আবেদন…
ইন্দোনেশীয় থেকে আমদানিকৃত বেনাপোল এক্সপ্রেস (বেনাপোল টু ঢাকা)
পুরানো কোচ নিয়ে আগে যেটা নতুন বরাদ্দ ছিলো পুনরায় সেইটা আমাদের যশোরবাসী কে ফিরিয়ে দিন।

বেনাপোল একটা আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট লক্ষ লক্ষ দেশি বিদেশী পর্যটক এই বন্দর দিয়ে ভারত যাতায়াত করে থাকে এখানে উন্নত মানের রেল কোচ সরিয়ে ভঙ্গুর একটি রেল কোচ দেয়া মূর্খতা ছাড়া কি জাতি জানতে চায়?